ঢাকা , শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫ , ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সাঁথিয়ায় সোতি জালে বাধাগ্রস্ত পেঁয়াজের আবাদ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর আজ নির্বাচনে আগে সহিংসতার শঙ্কা নিয়ে আইআরআই’র সঙ্গে একমত সরকার সংস্কার বাস্তবায়নে ব্যর্থ রাজনৈতিক দলগুলো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বাসাবাড়িতে এডিস মশার লার্ভা তদারকিতে মাঠে নামছে ডিএসসিসি মিথ্যা মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীলতায় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বাঁধনসহ সাত জন ১০ দিনের রিমান্ডে গাজীপুরে ৩৭ রোগাক্রান্ত ঘোড়াসহ বিপুল পরিমাণ ঘোড়ার মাংস জব্দ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬-এ লড়বেন জোনায়েদ সাকি ভাড়া বেশি নিলে তিনগুণ ক্ষতিপূরণ টিকিট কারসাজিতে ৫ বছরের জেল এনা পরিবহনের বাস জব্দের দাবি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ৭ নভেম্বরের বিপ্লবই দেশের অর্থনীতি ও গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছিল-নজরুল গবেষণায় আগ্রহী হচ্ছে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেগা প্রকল্পের পরিবর্তে মানুষকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার দেশীয় গরুর জাত সংরক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতে হবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা জ্বালানির অভাবে ১৩৫ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ১৫টির উৎপাদন বন্ধ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পাশাপাশি উন্নত অবকাঠামো চায় বন্দর রাষ্ট্রপতির কাছে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের কারণ পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি

কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীলতায় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

  • আপলোড সময় : ০৬-১১-২০২৫ ১০:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-১১-২০২৫ ১০:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন
কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীলতায় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
দেশে কৃষি উৎপাদনে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ওপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে কৃষক। আর তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশকের ব্যবহার মাটির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি দূষিত হচ্ছে পানির উৎস। তাছাড়া কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের প্রভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে ওসব রাসায়নিক-মিশ্রিত খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে ক্যানসার, কিডনি ও লিভারের নানা রোগ তৈরি হচ্ছে। এমনকি প্রজনন জটিলতাও দেখা দিচ্ছে। মূলত কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এবং ফসলকে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে কৃষক মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কৃষি এবং স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নিরাপদ খাদ্যমান বজায় রাখতে না পারার কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ কৃষিপণ্য প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। কারণ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কৃষি উৎপাদনে জৈব সার ও বায়োপেস্টিসাইড ব্যবহারে জোর দিলেও বাস্তবে এখনো বড় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর তাতে বাংলাদেশে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন। পাশাপাশি অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সারা দেশের কৃষকই। যদিও সরকার ইতিমধ্যেই ৪০টি কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে। তবে যথেষ্ট নয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
সূত্র জানায়, অতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মানবদেহের ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহারের ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপাদন হয়, যা পরিবেশের ক্ষতি করে। আবার অ্যামোনিয়া বেশি ব্যবহারের ফলে পানির মধ্যে অক্সিজেন কমে যায়। তাতে পানিতে মাছ থাকতে পারে না। আর  অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে মানবদেহে মারাত্মক সব রোগ হতে পারে। ক্যানসার, কিডনি বিকল ও ফুসফুসের নানা ধরনের জটিল রোগ হতে পারে। এমন নারীদের প্রজনন-সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অথচ দেশে ক্রমেই বাড়ছে কীটনাশকের ব্যবহার। বিগত ২০২৩ সালে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে কীটনাশকের ব্যবহার। অথচ  ১৯৭২ সালে তা মাত্র ৪ হাজার টন ছিল। কীটনাশক মূলত ধান, শাকসবজি ও ফল চাষে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে কীটনাশকের বাজার ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা এ খাতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার একটি বড় প্রমাণ।
সূত্র আরো জানায়, দেশের মোট আবাদযোগ্য ১ কোটি ৬০ লাখ হেক্টর জমির প্রায় ৬১ শতাংশে মাটিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারে জৈব পদার্থের বিপুল ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আর জমির উর্বরা শক্তি কমার মূল কারণ হচ্ছে একই জমিতে বছরে একাধিক বার ফসল চাষ এবং মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার। সাধারণত ৪৫ শতাংশ খনিজ বা মাটির কণা, ৫ শতাংশ জৈব এবং ২৫ শতাংশ করে পানি ও বাতাস থাকা মাটিকে সুষম মাটি বলা হয়। একটি আদর্শ জমিতে জৈব পদার্থের মাত্রা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ থাকা অতি প্রয়োজনীয় হলেও এ দেশের বেশির ভাগ জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ১ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং কিছু কিছু জমিতে তার পরিমাণ ১ শতাংশের চেয়েও কম। দেশের প্রায় ৫৫ শতাংশ জমিতে দস্তার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। মূলত অপরিকল্পিত চাষাবাদ, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস এবং অপরিকল্পিতভাবে সারের ব্যবহারের কারণে দেশে মাটি উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, একই জমিতে যুগের পর যুগ একই ফসলের চাষ, জমিকে বিশ্রাম না দেয়া, ইটভাটার জন্য মাটির উপরিভাগের অংশ তুলে নেয়া ছাড়াও মাটির টেকসই ব্যবস্থাপনার অভাবে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির ফলে এখন হুমকির মুখে রয়েছে মৃত্তিকা। আর মাটির স্বাস্থ্যহীনতায় প্রতি বছর ফসল উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গত এক দশকে বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির মাটির উর্বরতার মাত্রা শতকরা ২ দশমিক ৫ থেকে শতকরা ১ দশমিক ৫-এ দাঁড়িয়েছে।
এদিকে দেশের প্রায় ২৭ শতাংশ কৃষক কীটনাশকজনিত অসুস্থতায় ভুগছে। তার মধ্যে রয়েছে চোখ জ্বালা, ত্বকে ফোসকা, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা থেকে শুরু করে দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি, প্রজননজনিত সমস্যা ও স্নায়বিক জটিলতা। দেশে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার বাণিজ্যিক কীটনাশক নিবন্ধিত। তার মধ্যে ৩৬৩ ধরনের সক্রিয় উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে। সেগুলো মূলত ধান, শাকসবজি ও ফলচাষে ব্যবহৃত হচ্ছে। অধিকাংশ কৃষক কীটনাশকের মাত্রা, মিশ্রণ বা ব্যবহারবিধি মানেন না। অনেক সময় লেবেলের নির্দেশনাও উপেক্ষা করেন। ফলস্বরূপ খাদ্যপণ্যে বিষাক্ত অবশিষ্টাংশ থেকে যায়, যা ভোক্তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ জানান, খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে কৃষক মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তাতে একদিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে খাদ্যে ঢ়ুকছে বিষ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে কৃষকদের কীটনাশক নামক বিষের ব্যাপারে সচেতন করা জরুরি। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে এবং কৃষকদের সময়মতো সঠিক পরামর্শ দিতে হবে। কিন্তু কৃষকরা অনেক সময় যেখান থেকে কীটনাশক, সার কেনেন, ওই বিক্রেতাদের কথামতো তা ব্যবহার করেন। আর তাতেই ক্ষতি হচ্ছে বেশি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
নির্বাচনে আগে সহিংসতার শঙ্কা নিয়ে আইআরআই’র সঙ্গে একমত সরকার

নির্বাচনে আগে সহিংসতার শঙ্কা নিয়ে আইআরআই’র সঙ্গে একমত সরকার